
একাদশ শ্রেণির ভূগোল প্রশ্ন উত্তর দ্বিতীয় অধ্যায় – ভূগোল সাজেশন
১৬. নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে ভূপৃষ্ঠের উত্তাপ ক্রমশ কমতে থাকার কারণ কি?
নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে ভূপৃষ্ঠের উত্তাপ ক্রমশ কমতে থাকার কারণগুলি হল—
(i) নিরক্ষরেখায় সারাবছরই সূর্যরশ্মি লম্বভাবে কিরণ দেয় ফলে এখানে উস্নতা সারাবছরই বেশি থাকে।
(ii) নিরক্ষরেখা থেকে যত উত্তর ও দক্ষিণ ফ্রান্তিয় অঞ্চলে যাওয়া, যায়, সেখানে সূর্যের রশ্মি তির্যক ভাবে পড়ে, ফলে উষ্ণতা অপেক্ষাকৃত কম থাকে।
(iii) আবার, উভয় মেরু অঞ্চলে যেখানে সূর্যের রশ্মি এতটাই তির্যকভাবে পড়ে যে, উষ্ণতা একেবারেই কম থাকে।
(iv) উত্তাপের তারতম্য-এর জন্য নিরক্ষীয় অঞলে উষ্ণমণ্ডল সৃষ্টি হওয়ায় বায়ুপ্রবাহও উষ্ণ প্রকৃতির হয়ে থাকে।
(v) দুই মেরু অঞ্চলে হিমমণ্ডল হওয়ায় শীতল, ভারী বায়ু প্রবাহ হওয়ায় উত্তাপ খুবই কম হয়ে যায়।
১৭. দক্ষিণ গােলার্ধে শীতকালের স্থায়িত্ব বেশি ও উত্তর গােলার্ধে গ্রীষ্মকালের স্থায়িত্ব বেশি হয় কেন?
পৃথিবীর অপসূর ও অনুসূর অবস্থানের দরুন পৃথিবীর দুই গােলার্ধে শীত ও গ্রীষ্মকালের স্থায়িত্বের তারতম ঘটে। অপসূর অবস্থানের জন্য যখন সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব সর্বাধিক হয় তখন, ওই কক্ষপথের বিস্তারের জন্য পৃথিবীর পরিক্রমণের বেগ তুলনামূলক ভাবে কম থাকায় উত্তর গােলার্ধে গ্রীষ্মকালে সূর্যকিরণ দীর্ঘক্ষণ ধরে পড়ে, উত্তর গােলার্ধে গ্রীষ্মকালের স্থায়িত্ব বেশি হয়। এবং দক্ষিণ গােলার্ধে শীতকালের স্থায়িত্ব বেশি হয়।
১৮. জলবিষুব (Autumnal Equinox) কি?
যে দিন পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয় (১২ ঘণ্টা দিন ও ১২ ঘন্টা রাত), সেই দিনটিকে বলে বিষুব। ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখটিকে বলা হয় জলবিষুব।।
জলবিষুবের বৈশিষ্ট্যঃ
পৃথিবীর পরিক্রমণ কালে, পৃথিবী ২৩ সেপ্টেম্বর এমন এক অবস্থায় আসে যখন –
(i) মধ্যাহ্ন সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে পড়ে।
(ii) উত্তর ও দক্ষিণ গােলার্ধে সূর্য থেকে সমান দূরত্ব থাকে।
(i) ছায়াবৃত্ত প্রতিটি অক্ষরেখাকে সমদ্বিখণ্ডিত করে ফলে সর্বত্র দিন ও রাত্রের সময় সমান হয়।
(iv) এই সময় উত্তর গােলার্ধে শরৎকাল ও দক্ষিণ গােলার্ধে বসন্তকাল বিরাজ করে।
(v) উত্তর গােলার্ধের শরৎকালের জন্য এর অপর নাম হল শারদ বিষুব বা শরৎকালীন বিষুব।
১৯. কর্কটসংক্রান্তি (Summer Solstice) কি ? ও কর্কটসংক্রান্তির বৈশিষ্ট্য কি?
যে দিনটিতে মধ্যাহ্ন সূর্যের লম্বরশ্মি পৃথিবীর কর্কটক্রান্তি রেখা বা ২৩/১০ উত্তর অক্ষরেখার ওপর অবস্থান করে, সেই দিনটিকে বলে কর্কটসংক্রান্তি। ২৩ জুন তারিখটিকে কর্কটসংক্রান্তি বলে।
কর্কটসংক্রান্তির বৈশিষ্ট্যঃ
(i) সময় উত্তর গােলার্ধে সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে।
(ii) মধ্যাহ্ন সুর্যের লম্বরশ্মি কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর লম্বভাবে পড়ে।
(iii) উঃ গােলার্ধের দিন বড়ো (১৪ ঘন্টা) ও রাত ছােটো হয় (১০ ঘন্টা)।
(i) উত্তর গােলার্ধের সুমেরু বৃত্ত ৬৬ ডিগ্রী উঃ থেকে উত্তর মেরু বিন্দু ৯০ ডিগ্রী পর্যন্ত ২৪ ঘন্টাই সুর্যের আলাে থাকে, ৬ মাস দিন হয়।
(ii) উত্তর গােলার্ধের দিন সবচেয়ে বড়াে ও রাত সবচেয়ে ছােটো হয়।
(iii) দক্ষিণ গােলার্ধে এর বিপরীত অবস্থা অর্থাৎ দিন সবচেয়ে ছােটো ও রাত সবচেয়ে বড়াে হয়।
(iv) ২১ জুন সূর্য উত্তরায়ণের শেষ সীমায় পৌছায় বলে একে উত্তর অয়নান্ত বা কর্কটসংক্রান্তি বলে।
(v) উত্তর গােলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণ গােলার্ধে শীতকাল বিরাজ করে।
(vi) দিনে সূর্যের আলাে সুমেরু বিন্দু অতিক্রম করে আরও ২৩ ১/২ ডিগ্রী স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে নিরক্ষরেখার উত্তরে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে।
(vii) দক্ষিণ মেরু আলাে থাকে না বলে ৬ মাস রাত হয়।
(viii) উত্তর মেরু সংলগ্ন অঞ্চলে নিশীথ সূর্য দেখা যায়।
২০. মকর সংক্রান্তি (Winter Solstice) বৈশিষ্ট্য কি?
মকর সংক্রান্তির বৈশিষ্ট্যঃ
(i) মধ্যাহ্ন সূর্যরশ্মি মকরক্রান্তি রেখার (২৩ ১/২ ডিগ্রী দঃ) ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয়।
(ii) আবার দক্ষিণ গােলার্ধ সূর্যের দিকে অনেকটাই বেশি ঝুঁকে থাকতে দেখা যায়।
(iii) উত্তর গােলার্ধে সবচেয়ে তির্যকভাবে সূর্যরশ্মি পড়ে।
(iv) উত্তর মেরু বৃত্তের পরবর্তী অংশে সূর্যরশ্মি পৌছায় না৷
মকর সংক্রান্তির ফলাফলঃ
(i) দক্ষিণ গােলার্ধে দিন সবথেকে ছােটো হয় ও রাত সবথেকে বড়াে হয়।
(ii) উত্তর গােলার্ধে দিন সবথেকে বড়াে ও রাত সবথেকে ছাটো হয়।
(ii) দক্ষিণ গােলার্ধের কুমেরুবৃত্ত থেকে দক্ষিণমেরু পর্যন্ত অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টাই সূর্যের আলাে পায় ফলে ৬ মাস দিন হয়।
(iv) উত্তর গােলার্ধের সুমেরু বৃত্ত থেকে উত্তর মেরু পর্যন্ত ২৪ ঘন্টাই রাত থাকে ফলে ৬ মাস রাত হয়।
(v) উত্তর গােলার্ধে শীতকাল ও দক্ষিণ গােলার্ধে গ্রীষ্মকাল থাকে।
(vi) ওই দিন সূর্যের আলাে কুমেরু বিন্দু অতিক্রম করে আরও ২৩ ১/২ ডিগ্রী স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে নিরক্ষরেখা থেকে দক্ষিণ মেরুর দিকে দিনের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
(vii) দঃ মেরু সংলগ্ন অঞলে নিশীথ সূর্য দেখা যায়।
উপসংহার
আজকের এই পোস্টে, আমরা আপনাকে “ একাদশ শ্রেণির ভূগোল প্রশ্ন উত্তর দ্বিতীয় অধ্যায় ” -এর সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে, আর আপনার যদি এই পোস্ট সম্পর্কিত কোনও প্রশ্ন থাকে তবে আপনি আমাদের কমেণ্টের মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করতে পারেন
আরও পড়ুনঃ
One Comment